সাংবাদিক আফতাব হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দেওয়া পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আর একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।

 

ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) ও আসামিপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ (১২ অক্টোবর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল এবং আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। এদের মধ্যে রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক। আর সাত বছর কারাদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন সবুজ খান।

 

জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি।

 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আঞ্জুমান আরা বেগম, কাজী শামসুন নাহার ও সায়েম মো. মোরসেদ।

 

আর আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ আফতাব আহমেদ হত্যায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।

 

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। অন্যদিকে আসামিপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

 

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা রোডে ৬৩ নম্বরের নিজ বাসায় খুন হন ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ। পরের দিন ২৫ ডিসেম্বর বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

পরে হত্যার দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

 

আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করেন। পরে তারা বৌবাজার নামক একটি জায়গায় এ টাকা ভাগাভাগি করে নেন।

 

৬৯ বছর বয়স্ক সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে একুশে পদক পান তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইরান থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৩০ বাংলাদেশি

» বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক চেয়ারম্যান বাসার আটক

» ছুরিকাঘাতে গৃহবধূকে হত্যা

» দুই শিশুসহ মাকে গলা কেটে হত‍্যা

» জামায়াত ও এনসিপি বিএনপিকে ঠকাতে চাচ্ছে : গোলাম মাওলা রনি

» হাসিনার উচ্চারিত ‘রাজাকার’ শব্দই হয়ে ওঠে তার পতনের সূচনার স্লোগান

» দুপুরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

» আবু সাঈদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীরশ্রেষ্ঠ : আসিফ নজরুল

» রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১৮৭৩ মামলা

» বিএনপি ও তারেক রহমানের চরিত্র হননের ঘৃণ্য অপচেষ্টার প্রতিবাদ বিএনপির

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সাংবাদিক আফতাব হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দেওয়া পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। আর একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়।

 

ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) ও আসামিপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ (১২ অক্টোবর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন বিল্লাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল এবং আফতাব আহমেদের গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। এদের মধ্যে রাজু মুন্সি ও রাসেল পলাতক। আর সাত বছর কারাদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন সবুজ খান।

 

জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি।

 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারানুম রাবেয়া মিতি, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আঞ্জুমান আরা বেগম, কাজী শামসুন নাহার ও সায়েম মো. মোরসেদ।

 

আর আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ আফতাব আহমেদ হত্যায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার।

 

পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। অন্যদিকে আসামিপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

 

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা রোডে ৬৩ নম্বরের নিজ বাসায় খুন হন ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ। পরের দিন ২৫ ডিসেম্বর বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

পরে হত্যার দায় স্বীকার করে হুমায়ুন কবির, হাবিব হাওলাদার ও বিল্লাল হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ওই জবানবন্দিতে তারা স্বীকার করেন, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আফতাব আহমেদের বাসায় ডাকাতি করার সময় তাকে গামছা দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

 

আসামি বিল্লাল হোসেন কিসলু আফতাব আহমেদের বাসার ড্রয়ার ভেঙে ৭২ হাজার টাকা লুট করেন। পরে তারা বৌবাজার নামক একটি জায়গায় এ টাকা ভাগাভাগি করে নেন।

 

৬৯ বছর বয়স্ক সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে একুশে পদক পান তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com